আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারীর অপরাধ ও শাস্তি


আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারীর অপরাধ ও শাস্তি

হরতাল, অবরোধ ও আন্দোলনের নামে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দাঙ্গা-হাঙ্গামা, বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার দ্রুত বিচার আইন (সংশোধিত) ২০১০ পাস করে। এ আইনে অভিযুক্ত হলে শাস্তি কী হতে পারে অথবা জামিনের কোনো সুযোগ আছে কি না, তা নিম্নে আলোচনা করা হলো।

 

cropped-koordinerede-kontrolaktioner-p-kant-med-loven-29retssikkerhed.jpgআইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ

১. কোনো প্রকার ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে বা বেআইনি বল প্রয়োগ করে কোনো ব্যক্তি বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের নিকট হতে চাঁদা, সাহায্য বা অন্য কোনো নামে অর্থ বা মালামাল দাবি, আদায় বা অর্জন করা বা অন্য কোনো প্রকার সুযোগ-সুবিধা আদায় করা বা আদায়ের চেষ্টা করা।

২. কোনো প্রকার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বা বেআইনি বল প্রয়োগ করে স্থলপথ, রেলপথ, জলপথ বা আকাশপথে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা বা বিঘ্ন সৃষ্টি করা বা কোনো যান চলাচলের গতির বিরুদ্ধে ভিন্ন পথে পরিবর্তন করা।

৩. ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো যানবাহনের ক্ষতিসাধন করা।

৪. ইচ্ছাকৃতভাবে সরকার, বা কোনো সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, বা কোনো প্রতিষ্ঠান, বা কোনো ব্যক্তির স্থাবর বা অস্থাবর যে কোনো প্রকার সম্পত্তি বিনষ্ট বা ভাঙচুর করা।

৫. কোনো ব্যক্তির নিকট হতে কোনো অর্থ, অলংকার, মূল্যবান জিনিসপত্র বা অন্য কোনো বস্তু বা যানবাহন ছিনতাইয়ের চেষ্টা করা বা ছিনতাই করা বা জোরপূর্বক কেড়ে নেওয়া।

৬. কোনো স্থান, বাড়িঘর, দোকানপাট, হাটবাজার, রাস্তাঘাট, যানবাহনে বা প্রতিষ্ঠানে পরিকল্পিতভাবে বা আকস্মিকভাবে একক বা দলবদ্ধভাবে শক্তির মহড়া বা দাপট প্রদর্শন করে ভয়ভীতি বা ত্রাস সৃষ্টি করা বা বিশৃঙ্খলা বা অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করা।

৭. কোনো সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের দরপত্র ক্রয়, বিক্রয়, গ্রহণ বা দাখিল জোরপূর্বক বাধা প্রদান বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা বা কাউকে দরপত্র গ্রহণ করতে বা না করতে বাধ্য করা।

৮. কোনো সরকারি বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা কোনো প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে বা তাঁর কোনো নিকট আত্মীয়কে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ওই কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে কোনো কাজ করতে বা না করতে বাধ্য করা কিংবা তাঁর দায়িত্ব পালনে কোনো প্রকারের বাধা সৃষ্টি করা।

আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধের শাস্তি

১. এই আইনে কোনো ব্যক্তি কোনো আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ করলে তিনি অন্যূন দুই বছর এবং অনধিক পাঁচ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ডে এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

২. এসব অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি অপরাধ সংঘটনকালে সরকার কিংবা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা কোনো প্রতিষ্ঠান বা কোনো ব্যক্তির আর্থিক ক্ষতিসাধন করলে তার জন্য আদালত সে বিবেচনায় উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ, ক্ষতিগ্রস্ত সরকার বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির অনুকূলে প্রদান করার জন্য উক্ত দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে আদেশ দিতে পারবে এবং এই ক্ষতিপূরণের অর্থ সরকারি দাবি হিসেবে আদায়যোগ্য হবে।

৩. কোনো ব্যক্তি কোনো আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করলে তিনি উল্লেখিত দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন।

এই আইনে মিথ্যা মামলা

যদি কোনো ব্যক্তি অন্য কোনো ব্যক্তির ক্ষতিসাধনের অভিপ্রায়ে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ সংগঠনের কোনো ন্যায্য বা আইনানুগ কারণ নেই জেনেও তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা অভিযোগ দায়েরের কারণে প্রথম ব্যক্তি কমপক্ষে দুই বছর এবং অনধিক পাঁচ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন এবং অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হবেন।

জামিন সংক্রান্ত বিধান

রাষ্ট্রকে শুনানির যুক্তিসংগত সুযোগ দিয়েও এবং সংশ্লিষ্ট নথি পর্যালোচনা করে আদালত কিংবা আপিল আদালত যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, এই আইনের অধীন অপরাধ সংঘটনের জন্য অভিযুক্ত কিংবা ক্ষেত্রমত দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তিকে জামিন দেওয়া ন্যায়সংগত হবে তা হলে সেই মর্মে কারণ লিপিবদ্ধ করে আদালত কিংবা ক্ষেত্রমতো আপিল আদালত ওই ব্যক্তিকে জামিনে মুক্তির আদেশ দিতে পারবেন।

Leave a comment